ডেস্ক নিউজ:
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া দশ জঙ্গিজামা’তুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমানের পর বুধবার (১২ এপ্রিল) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো শীর্ষ জঙ্গি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও তার দুই সহযোগীর। এই তিনসহ এ পর্যন্ত ১০ জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত জঙ্গিনেতা শায়খ আবদুর রহমান ও মুফতি হান্নান ছাড়া বাকি আটজন হলো সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানি, আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হোসেন মামুন, খালেদ সাইফুল্লাহ ওরফে ফারুক, আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফ, শরীফ শাহেদুল আলম বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপন।
কারা সূত্র জানায়, বোমা হামলা চালিয়ে ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠি জেলার সিনিয়র সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাঁড়েকে হত্যা করে জঙ্গিরা। ওই মামলায় ২০০৬ সালের ২৯ মার্চ মধ্যরাতে জেএমবি’র শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান ও বাংলা ভাইসহ ছয় জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ওই রাতে আরও যাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয় তারা হচ্ছেন, শায়খ আবদুর রহমানের ছোট ভাই আতাউর রহমান সানি, মেয়ের জামাই আবদুল আউয়াল, বোমা হামলাকারী ইফতেখার হোসেন মামুন ও খালেদ সাইফুল্লাহ ওরফে ফারুক। একই মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় ২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর। এরপর অন্যকোনও মামলায় আর কোনও জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর হয়নি।
গোপালগঞ্জে মুফতি হান্নানের লাশ অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামানো হচ্ছে
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে জেলার সিনিয়র সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাঁড়ের গাড়িতে বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। হামলায় তারা দু’জনই নিহত হন। একই ঘটনায় বোমা হামলাকারী ইফতেখার হোসেন মামুন, জেলা জজ আদালতের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আব্দুল মান্নান ও দুধ বিক্রেতা বাদশা মিয়া গুরুতর আহত হন। ২০০৬ সালের ২৯ মে এই হত্যা মামলার রায়ে ঝালকাঠীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত শায়খ রহমানসহ সাতজঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ এই মামলায় দেশের চারটি কারাগারে জেএমবির শীর্ষ ছয় জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। আরিফ পলাতক থাকায় তার ফাঁসি তখন কার্যকর সম্ভব হয়নি।
২০০৭ সালের ১০ জুলাই আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার হওয়ার পর আরিফ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট তার মৃত্যুদণ্ডদেশ বহাল রাখেন। পরে রিভিউ আবেদনের পরও আপিল বিভাগ তার সাজা বহাল রাখেন। ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া একই বছরের ১৬ অক্টোবর রাতে খুলনা কারাগারে আরিফের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
এরপর আজ বুধবার রাত ১০টায় কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি ও সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে হরকাতুল জিহাদের শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ তিন জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হলো। কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল আলম বিপুল ও সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেট হজরত শাহজালাল (রা.)-এর মাজারে বাংলাদেশের সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় এ তিনজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।